যৌনতায় যখন পরিচয়/১৪

যৌনতায় যখন পরিচয়/১৪

অবকাশে সঞ্জয়

ক’দিন আগে একটি দৈনিক সংবাদপত্রে সংবাদটা বেরিয়েছিল। ছেলে সেজে দশ বছর পার আফগান কন্যার। এই ছিল সংবাদটির শিরোনাম। মূল ঘটনা হল আফগানিস্তানের এক বিশেষ প্রথা অনুসারে যেসব পরিবারে কোন ছেলে জন্মায় না, শুধু মেয়ে জন্মায় সেই পরিবার কোন এক মেয়েকে ছেলে সাজিয়ে মানুষ করে। এই প্রথা স্থানীয় ভাষায় বাচা পোশি নামে পরিচিত। সংবাদটির শেষে সাংবাদিক মেয়েটির লিঙ্গ পরিচয় জনিত সংকট সংক্রান্ত প্রশ্নও তুলেছেন এবং জনৈক অধ্যাপক ফেতরাত-কে কোড করে লিখেছেন, এই মেয়েরা বাধ্য মেয়েদের ভূমিকায়  মানিয়ে নিতে পারে না। অবসাদের শিকার হয়। যাইহোক নিউজটি পড়ে জানতে পারি নি যে পরিবারে জন্ম নেওয়া একাধিক মেয়েদের মধ্যে কোন্‌ মেয়েকে ছেলে সাজানো হয়। যে কোন মেয়েকে কি? নাকি যে মেয়েটি শৈশবে বেশ দূরন্ত অর্থাৎ ছেলেলি আচরণ করে তাকে? নিউজটি এও জানিয়েছে, মেয়েটি ছদ্মবেশে অর্থাৎ ছেলে সেজে ছেলেদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ছেলেদের মতো ইঁটভাটায় কাজ করে রোজ। কিন্তু অন্য ছেলেরা বুঝতেই পারে না যে সে ছেলে নয়, মেয়ে। যত খটকা এইখানে। যতই ছেলে সেজে থাক। অন্যরা বুঝতে পারবে না? তা কি সম্ভব? সম্ভব হতে পারে যদি ছেলেটি রূপান্তরকামী পুরুষ হয়। কে বলতে পারে, ‘বাচা পোশি’ প্রথা হয়তো এক ধরনের রূপান্তরকামী প্রথার স্বীকৃতি। নইলে ছেলেদের ভিড়ে কোন মেয়ে যতই পরিবারের চাপ থাক কাজ করতে পারতো না। যৌনতা যে বড় বালাই। এ কেবল পরিচিতির সংকট তৈরি করে না, অন্যদের হাত থেকে নিজেকে বাঁচাতেও দরকার হয়।

[ছবিঃ অরূপ দাস]

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *