মুখোশ তুমি কার?

মুখোশ তুমি কার?

— অনিরুদ্ধ (অনির) সেন

১০ই ডিসেম্বর ২০১৭ কোলকাতায় অনুষ্ঠিত হলো ১৬তম রামধনু গৌরব যাত্রা। দিনের বদল, রাতের বদল, আর বদল রাষ্ট্রের শোষণের পদ্ধতিতে। বদল এসেছে পুরুষতন্ত্র আর নারীবাদের মধ্যেকার বাদ-বিসম্বাদ-সংঘাতে। তার সাথে তাল মিলিয়ে বদল এসেছে চলার ছন্দে, পোশাকের ধৃষ্টতায়, আর প্রতিবাদ প্রকাশের ভঙ্গিমায়। ব্রিটিশ যুগের ভারতীয় দণ্ডবিধি ৩৭৭, ২০০৯ সালের ১০রা জুলাই অনৈতিক বাতিলের দলে নিজের জায়গা করে নেওয়ার সাথে সাথে, উৎসবে ফেটে পড়লো ভারতের লিঙ্গ-যৌন-প্রান্তিক মানুষদের এতদিনের ক্ষোভ-জ্বালা-যন্ত্রণা, আনন্দের ঝলকানিতে, এক নতুন স্বাধীন জীবনের রূপ নিয়ে। ২০১২এর ২৭শে মার্চ, সেই নতুন স্ফুলিঙ্গরা নিভে গেল দেশের সর্বোচ্চ আদালতের দেওয়া কলঙ্কিত রায়ে। ৩৭৭ ধারা ফিরে এলো ভারতের সংবিধানে, বহাল তবীয়তে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা মাঝেসাঝে — ৩৭৭ ধারা খারাপ, ৩৭৭ এই, ৩৭৭ ঐ — ইত্যাদি ট্যাঁফোঁ করলেও প্রয়োজনের তুলনায় তা হয়তো নগণ্য।

অন্যদিকে, তার দু’বছর বাদে ২০১৪ সালের ১৫ই এপ্রিল, সেই সর্বোচ্চ আদালতের নালসা রায় সম্মান দিলো তৃতীয় লিঙ্গস্বত্বার। আমি কি, তা ঠিক করবো আমি — আর রাষ্ট্র তাকে সম্মান দিতে বাধ্য থাকবে, রক্ষা করতে, লালন করতে প্রতিশ্রুত থাকবে সর্বোতভাবে। ২০১৭ সালের শীতকালীন অধিবেশনে কেন্দ্রের সরকার আবার নিয়ে আসতে চাইলো নতুন এক বিল। নালসার উপরে ভিত্তি থাকলেও এই বিল কেড়ে নিতে চাইলো স্ব-লিঙ্গ-নির্ধারণের অধিকার। দেশের লিঙ্গ-সংখ্যালঘু মানুষকে দাঁড় করাতে চাইলো এক উদ্ভট স্ক্রিনিং কমিটির সামনে। তাদের উপর আক্রমণ/শোষণের জন্যে দোষীদের উপর ধার্য করতে চাইলো লঘুদণ্ড। আর শিক্ষা-স্বাস্থ্য-চাকুরীক্ষেত্রে সংরক্ষণের বালাই ছাড়াই কাঁচি চালানোর জন্যে উঠে এলো কিছু হাত, তাদের স্বাভাবিক জীবিকার ক্ষেত্রকে নিষিদ্ধ করার লক্ষ্যে। স্বাধীন ভারতের বয়স ৬০ পেরিয়েছে, ইতিহাসও অনেকটা রাস্তা পেরিয়েছে রামধনু ধুলো গায়ে মেখে। তার সবকিছু বলতে গেলে নিজেই গুলিয়ে যাবো। তাই, সে’সমস্ত থাক। বরং যে রাস্তা দিয়ে হাটলাম ১০ই ডিসেম্বর ২০১৭তে, সেই রাস্তাতেই হেঁটে আসি আবারো।

১৯৯৯ সালের ২রা জুলাই, কোলকাতা শহরের ফ্রেন্ডশিপ ওয়াক, খাতায় কলমে শুধু ভারতবর্ষ না, গোটা দক্ষিণ এশিয়ায় সম্ভবত প্রথম প্রাইড ওয়াক। তারই স্মৃতি আওড়াতে গিয়ে পবনদা (পবন ঢাল) তুলে আনলেন বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ জায়গা।

“আমি জানিনা এর আগে এরকম গুরুত্বপূর্ণ কোন ইভেন্ট হয়েছিলো কি না, অন্তত আমাদের বা কোন সংবাদমাধ্যমের নজরে সেটা আসেনি। এই ইভেন্টে দেশের অন্যান্য জায়গার ভূমিকা/অংশগ্রহণ থাকলেও, সেই সময় কোলকাতাতেই এটা করা গেছিলো বোধহয় বাংলার এই মাটিতে প্রোথিত সামাজিক আর রাজনৈতিক ঔদার্যের জন্যেই। তখন ব্যাঙ্গালোরে অতোটাও কমিউনিটি মোবিলাইজেশন নেই, মুম্বইতে দক্ষিণপন্থি উগ্র পুরুষতান্ত্রিক রাজনীতির রমরমা। দিল্লীতে সেভাবে কোন সংগঠন দানা বাঁধেনি, যারা এরকম একটা প্রাইড ওয়াকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারে। চেন্নাই/হায়দ্রাবাদে প্রায় কিছুই ছিলোনা। উল্টোদিকে আমরা কোলকাতার লোকেরা কিন্তু লড়াইয়ের জন্যে বেশ কিছু সংগঠন তৈরি করে ফেলেছিলাম ততোদিনে। এবং তারা নিজেদের অভিজ্ঞতাতেও যথেষ্ট সমৃদ্ধ। এই মাটি ভারতের অন্যান্য সব জায়গা থেকে অনেক বেশী করে সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করতে পারে, আপন করার ক্ষমতা রাখে, এখনও অবধি এটাই আমার নিজস্ব মতামত।”

… তবু প্রাইড ওয়াকের এই ধরণ পাল্টেছে অনেকটা …

“সংখ্যায় এখন অনেক মানুষ আসেন। আগে ট্রান্সজেন্ডার মানুষেরা বেশী আসতেন। এখন গে লেসবিয়ানরা বেশী আসছেন। আর তাছাড়া অনেক বন্ধু-সংগঠনও এসে দাঁড়িয়েছে আমাদের পাশে। এবারে আমরা বধিরদের জন্যে সাইন ল্যাংগুয়েজের ব্যাবস্থা করতে পেরেছি, হুইলচেয়ার নিয়ে যাতে মানুষ স্বচ্ছন্দে অংশ নিতে পারেন তার ব্যবস্থা করেছি, দৃষ্টিহীনদের স্বাদর অভ্যর্থনা জানিয়েছি। — হ্যাঁ, সবাইকে নিয়ে চলা জানিনা কবে হবে, কিন্তু, চেষ্টা থামালে কি চলে?”

মানুষের ইতিহাসে উদ্যমতা আর স্বাধীনতা এক অজেয় অধ্যায়। তাকে চাপা দেওয়া যায়না কোনভাবে। পবনদা জানালেন কীভাবে ২০০৫ সালে হাইকোর্টের এক জাজ বলেছিলেন

“আমি যৌনতার বিরুদ্ধে নয়, সমকামিতার বিরুদ্ধেও নয়, আজ যখন কোলকাতার রাস্তায় প্রাইড ওয়াক হচ্ছে সেটাই কিন্তু একটা বড়ো ব্যাপার।”

… কখনো পাড়ার মুদীর দোকানীর সাধুবাদ, টিভিতে প্রাইড দেখে তার ভালো লেগেছে, তার সাথে সেই মিছিলের বক্তব্যগুলোও গ্রহণযোগ্য মনে হয়েছে সেই মানুষটির, কখনো আবার “অতি-উচ্চশিক্ষিত” পরিচিত মানুষের কথা বন্ধ করে দেওয়া, এই দুই নিয়ে পবনদা কিন্তু উৎসাহী সমাজে প্রাইড ওয়াকের ইতিবাচক প্রভাব নিয়েই।

“এতোগুলো মানুষ এরকম অদ্ভুতভাবে সেজে নিজের বাড়ি থেকে আজ রাস্তায় বেড়িয়ে ঠিক কি বলার চেষ্টা করছে — এই প্রশ্নের মুখে তো আজ আমরা শহরের লোকেদের দাঁড় করাতে পেরেছি, তাই বা কম কিসের?”

তাই হাঁটা বন্ধ করার প্রশ্ন নেই, এবং হেঁটে চলেছি সেই একই রাস্তায়,কদিন আগেই যেখান দিয়ে হেঁটে এলাম সেখান দিয়েই, মিলিয়ে নিচ্ছি, উলের মতো বুনে নিচ্ছি, কিছু স্মৃতিপট। আগের বছর, মনে আছে, প্রাইডে চলার সময়, রাস্তার দু’ধারের বাচ্চাদের বেলুন বিলি করেছিলাম। সংগঠকদের বিলি করা লিফলেট, যাতে আমাদের নিজেদের মতো করে বেঁচে থাকার দাবী, আর সঙ্গে কিছু বেলুনরঙ্গা একসাথে চলার আহ্বান। আমাদের স্লোগান, আমাদের উল্লাস, আমাদের অহংকার, এই একটা দিনে মুছে দিয়ে যায় “আমরা/ওরা”-এর ব্যবধান। আজ সমাজ পাল্টাচ্ছে, আমার বন্ধুরা শুধু আলাদা বলে ছুঁড়ে ফেলে দেয়না আমায়। আমার চেয়ে ছোট যারা, তারা তো কলেজে স্কুলে নিজেদের পরিচয়/অধিকার নিয়েই সোচ্চারভাবে টিকে আছে। প্রশ্ন, উত্তর, কথা, আতিথেয়তা, বন্ধুত্ব, আলোচনা — আর অবশ্যই তর্কও — সব মিলিয়ে ধীরে ধীরে আমরা মিশে যাচ্ছি বাকিদের সাথে — মিশছি, কিন্তু আমাদের নিজের “আমি”টাকে নিয়েই।

“এটা অবশ্যই একটা স্বাধীনতার জায়গা” —

২০১১ সালে তৈরি হওয়া কে-আর-পি-এফ সদস্য সৌভিকের কাছে এটাই ছিলো কোলকাতা প্রাইড ওয়াকের মানে। কথায় কথায় ফুটে উঠলো তার কাছে প্রাইড ওয়াকের এক বৃহত্তর সংজ্ঞা।

“আসলে সবকিছুই তো একসাথে যুক্ত — সমকামবিদ্বেষ, রুপান্তরকামবিদ্বেষ, নারীবিদ্বেষ, বর্ণপ্রথা, দলিত-অবদমন। আজ এই হাঁটার ছন্দে শুধু যৌনতার অধিকার আর লিঙ্গস্বাধীনতাই থাকেনা, কিছু মানুষ হয়তো কাশ্মীর মাংগে আজাদি স্লোগান তোলেন, অন্যদিকে কাশ্মীরি পণ্ডিতদের কথা বলার জন্যেও কি কেউ থাকেনা? নিশ্চয়ই থাকে। দলিতদের নিয়ে কথা হয়। নারী স্বাধীনতা নিয়ে শ্লোগান ওঠে।”

কোলকাতা রেইনবো প্রাইড “কে-আর-পি-এফ” -এর হাত ধরে পথচলা শুরু করে ২০১১ সালে। সেইবছর ৫০০জন মানুষ হেঁটেছিলেন নিজেদের অধিকার রক্ষায়। ২০১২তে ১০০০, ২০১৩তে ১৫০০।

“আগের বছর পুলিশ/প্রশাসনের কাছ থেকে জেনেছিলাম যে প্রায় ২৫০০ লোক প্রাইডে হেঁটেছিলেন, এবার ভেবেছিলাম হয়তো ৩০০০ জন আসবেন, কিন্তু সংখ্যাটা দাঁড়ায় গিয়ে ৫০০০এ!!”

এই জনসমুদ্র হওয়ার কারন? পবনদা বলছে…

“ট্রান্সজেন্ডার বিলের প্রতিবাদ এবারের প্রাইডওয়াকের সাথে মিশে যাওয়ার জন্যে অনেক ট্রান্স মানুষেরাই এবারে অংশগ্রহণ করেছেন।”

আর সৌভিকের কথায়…

“তোমার পতাকা যারে দাও তারে বহিবারে দাও শকতি। সেই শকতি-ই আজ বাড়ছে। কেউ আছেন নিজের স্বত্বা প্রদর্শনে ব্যস্ত, কেউ হয়তো রামধনু পতাকাটাকে ছুঁয়ে দেখতে চায় একবার, কেউ শ্লোগানে ব্যস্ত — আসলে এই একটা দিনে তুমি জানো যে কেউ তোমাকে টিটকিরি দেওয়ার সুযোগ পাবেনা। কারন ওখানে তোমার মতো আরও হাজার হাজার মানুষ হাঁটছে। এই উৎসবটাই আমাদের প্রতিবাদ প্রকাশের সেরা মাধ্যম।”

কোলকাতা রেইনবো প্রাইড ওয়াক, যাকে ছোট ভাষায় “কে-আর-পি-ডব্ল্যু” নামেই আমরা অনেকে চিনি, তার নিয়ম কিছু? সৌভিক বললো…

“নিয়ম একটাই, কোন তকমা নিয়ে এসোনা। ওখানে আমরা সবাই এক। নইলে আমাদের সাথে অ্যাক্সেঞ্চারের মতো সংস্থাও হেঁটেছে, হেঁটেছে রাজনৈতিক গোষ্ঠীরাও।”

পবনদা বললো…

“প্রত্যেকবারেই মানুষেরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়েন। ভলেন্টিয়াররা তাল রাখতে হিমশিম খান। কিন্তু তাদের মধ্যে একটা যোগসূত্র থেকেই যায়, কোন এক অদৃশ্য সুতোয় যেন সবাই বাঁধা। ট্রাফিক থেকে বেঁচে হাঁটো, এ’টুকুই, নইলে এটা তো আর মিলিটারি মার্চ নয়, নিয়মের সেরকম কোন বালাই নেই।”

নাহ! সত্যিই একটা ছন্দ থাকে। ৫০০০ জোড়া পা, তাদের অনুরণন থাকতেও বাধ্য। তারই আবেশে যেন মানুষের মাঝে মিশে যাচ্ছে এই স্রোত। রাষ্ট্র, ধর্মীয় গোঁড়ামো, পুরুষতন্ত্র নতুন নতুন ফন্দি আঁটছে এই জনস্রোতের বিরুদ্ধে। ট্রান্স বিলের নাম করে, তাদের ভালো করার হুজুক তুলে সর্বনাশ ডেকে আনছে তাদের জীবনে। ৩৭৭ নিয়ে মাঝে মাঝে কথা বললেও কেউই কিস্যু করছেনা। বরং একের পরে আরেক পরোক্ষ নিয়ম চালু করে লিঙ্গ-যৌন-প্রান্তিক মানুষদের অবদমনের নতুন নতুন ফন্দি আঁটছে তারা। সন্তান দত্তক নেওয়ার পথে তৈরি করছে বাধা, রাষ্ট্রসংঘে ভোট দিচ্ছে সমকামীতার জন্যে মৃত্যুদন্ডের সপক্ষে। নারীকে পণ্য করে তুলে ধরার চেষ্টা করছে নারীদিবসের এক নতুন মানে।

সৌভিকের কথায় খানিক প্রতিবেশী আরেক বঙ্গভূমির যন্ত্রণাও উঠে এলো।

“আমার শোভাযাত্রার অংশ হিসেবে যদি একদল মানুষ অংশগ্রহণ করে, তাহলে তারা তো আমার শোভাযাত্রাকেই বলীয়ান করছে। এসব নিয়ে আমায় বলতেই বোলোনা কিছু, কান্না চলে আসে আমার। তাদের লিঙ্গ-যৌন-পরিচয় ভিন্ন — শুধু এই কারণে তাদেরকে বাতিল করে দেবো এই অধিকার আমায় কে দিয়েছে? মাঝে মাঝে মনে হয় এই সভ্যতার দরকারই নেই। অভিজিৎ রায়, জুলহাস মান্নান, গৌরী লঙ্কেশ, আফ্রাজুল, তনয় –এই সব হত্যাই তো আমার কাছে একইরকম লাগে। যদি এই সভ্যতা একজন মানুষকে জীবন্ত জ্বালিয়ে মেরে ফেলতে পারে রাজস্থানে, তাহলে এই সভ্যতাটাই জ্বলেপুড়ে ছারখার হয়ে যাক।”

তবু জীবন চলে নিজের মতো করে। সুপ্রিমকোর্টের পরিসংখ্যানে ভারতের মাটিতে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র জনগোষ্ঠী, যাদের দায়ভার দেশের আইন স্বীকার করেনি, যাদের জন্যে রাষ্ট্র ভাবেনি, ধর্মের বর্তমান হোতারা যাদের নিয়ে মাথা ঘামায়না, পুঁজিবাদ শুধু নিজেদের কাজে ব্যবহার করে ছেড়ে দেয়, তারা নিজেদের গান খুঁজে নিয়েছে নিজেদের ভাষায়। নিজেদের প্রতিবাদ কুড়িয়ে পেয়েছে রাশভাঙ্গা উৎসবে।

হাঁটতে হাঁটতে প্রায় শেষ, দেখা হলো প্রতুলানন্দদার সাথে। দেখে একটাই প্রশ্ন করলো আমায়।

“ক’জন কে দেখলি রে মুখোশ পড়েছে আজ?”

উত্তর তৈরিই ছিলো, আমিও লক্ষ্য করেছিলাম। পাঁচ হাজার জন মানুষের ভিড়ে

“খুব বেশী না গো প্রতুলদা, ৩ থেকে ৪ জন”।

… মনে মনে বললাম, আমাদের মুখোশ পড়ার দিন শেষ হচ্ছে প্রতুলদা, আমরা আর লুকোবোনা, লুকাবে এবার রাষ্ট্র, ধর্ম, লুকাবে পুরুষতন্ত্র নিজের ধুতির আঁচলের পিছনে। দেখা যাক তাদের নতুন মুখোশ পরা ফন্দিগুলোর জবাব আমাদের প্রকাশ্য প্রতিবাদে আমরা ধুয়ে মুছে ফেলতে পারি কি না। পারবো তো? পারতে যে হবেই।

কৃতজ্ঞতাঃ পবন ঢাল এবং সৌভিক

ছবিঃ কৌশিক গুপ্ত এবং লীনা মহাল

প্রুফ রিডিংঃ অভিষেক মুখার্জী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *