কাঁচালঙ্কা

যৌনতায় যখন পরিচয়/১৮

যৌনতায় যখন পরিচয়/১৮

অবকাশে সঞ্জয়

–      কালকের কোর্টের রায় শুনেছো?

–      কোর্টে তো রোজই রায় বেরোয়। তুমি কোন্‌ কোর্টের রায়ের কথা বলছ?

–      আরে এক বৃহন্নলাকে গ্রেফতার করে কাল আলিপুর কোর্টে তোলা হয়েছিল। তাঁকে নিয়ে বিচারকের রায়।

–      ও তাই? না গো শুনিনি।

–      আরে পেপারে দিয়েছে। পড়ে নাও।

–      তুমি তো পড়েছো। তুমিই বলো না।

–      বিচারক বৃহন্নলার জামিন না দিয়ে লক আপে রাখার নির্দেশ দিয়েছে।

–      এই কথা। তা তো দিতেই পারে। তা নিয়ে আবার হৈ চৈ এর কি আছে।

–      আগে পুরো টা শোন।

–      বেশ বলো।

–      বিচারক লক আপে রাখার নির্দেশ দেওয়ার পরই ওই বৃহন্নলার উকিল বলেন, কোন্‌ লক আপে রাখা হবে হুজুর, আমার মক্কেল তো নারীও নন, পুরুষও নন। ইনি তৃতীয়লিঙ্গ।

–      তা ঠিক। তা বিচারক কি করলেন তখন?

–      বিচারক নির্দেশ দিয়েছেন, ওই বৃহন্নলাকে পৃথক বিশেষ সেলে রাখতে হবে।

–      বাহঃ। এই নির্দেশ সত্যি এক যুগান্তকারী রায়। তৃতীয়লিঙ্গের নিজস্ব সত্তার জয়।

–      হুম। সেজন্যই তো বললাম।

–      কিন্তু একটা প্রশ্ন আছে।

–      কি?

–      ওই বৃহন্নলা কে যে পুলিশ অফিসার গ্রেফতার করেছিলেন তিনি কে?

–      মানে?

–      তিনি নিশ্চয় পুরুষ কিংবা নারী পুলিশ অফিসার?

–      হ্যাঁ, তা তো হবেই।

–      লক আপে যদি পৃথক সেল হয়, তাহলে গ্রেফতার করার সময় নারী বা পুরুষ কেন? কেন তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ দিয়ে গ্রেফতার করা হবে না?

–      তাই তো… তার মানে তুমি বলতে চাইছো…

–      আমি বলতে চাইছি লিঙ্গ ভিত্তিক নারী ও পুরুষ যখন সকল কর্মক্ষেত্রে সুবিধা পাচ্ছে তৃতীয়লিঙ্গরা কেন পাবে না?

–      ঠিক। পাওয়া উচিৎ। পেলেই তবে তৃতীয় লিঙ্গের যৌন পরিচয় সার্থকতা লাভ করবে।

[ছবিঃ অরূপ দাস]

Exit mobile version