কাঁচালঙ্কা

এলজিবিটি সম্প্রদায়ের অধিকার রক্ষার আশ্বাস সিপিআইএমের ইশতেহারে

এলজিবিটি সম্প্রদায়ের অধিকার রক্ষার আশ্বাস সিপিআইএমের ইশতেহারে

— অনিরুদ্ধ (অনির) সেন – নিজস্ব সংবাদদাতা

দল আসে, দল যায়। পাল্টায়না ভারতের এলজিবিটি বা লিঙ্গ-যৌন-প্রান্তিক মানুষদের অবস্থান। তারা যেন ব্রাত্য রাজনৈতিক সমাজেও। কিন্তু এবার যেন অন্য সুর শোনা গেল ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির (মার্কসবাদ) ইশতেহারে। সামনেই ভারতের ১৭তম সাধারণ নির্বাচন। দেশের কেন্দ্রীয় সরকার নিয়ন্ত্রন করবে কারা তারই প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সমস্ত রাজনৈতিক দল। এর মধ্যেই গতকাল, দিল্লীতে সিপিআইএমের মহাসচিব শ্রী সীতারাম ইয়েচুরি সংবাদমাধ্যমের সামনে প্রকাশ করলেন দলের এবারের নির্বাচনী ইশতেহার। এই ইশতেহারের দ্বিতীয় খণ্ডে “ট্রান্সজেন্ডার” শীর্ষক অংশে সিপিআইএম প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছে ভারতের লিঙ্গ-যৌন-প্রান্তিক মানুষের মানবিক এবং নাগরিক অধিকার রক্ষায়। যদিও, কোন দল ক্ষমতায় এলে তারা নিজেদের কাজকর্ম এই ইশতেহারেই সীমাবদ্ধ রাখতে পারবে তার নিশ্চয়তা দেওয়া বেশ মুশকিলের। অন্যদিকে ইশতেহারে প্রতিশ্রুত কাজকর্ম গদিতে বসার পর বেমালুম ভুলে যাওয়ার নজিরও ভূরি ভূরি। তবু, নিজেদের ইশতেহারে দেশের এলজিবিটি সম্প্রদায়ের কথা বলাও, বর্তমান সময়ে, ভারতের রাজনীতিতে নিঃসন্দেহে একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা।

সংবাদমাধ্যমের সামনে এবং নিজেদের নির্বাচনী ইশতেহারে সিপিআইএম লিঙ্গ-যৌন-প্রান্তিক অথবা এলজিবিটি নাগরিকদের অধিকার রক্ষায় যে যে মর্মে প্রতিশ্রুত হয়েছে তা খানিক খানিক এরকম।

প্রসঙ্গত, সিপিআইএম এই সাধারণ নির্বাচনে বর্তমানের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের সাথে একসাথে লড়াইয়ে অংশ নিয়েছে আসন সমঝোতার মাধ্যমে। লিঙ্গ-যৌন-প্রান্তিক নাগরিকদের অধিকার রক্ষার পাশাপাশি নারীদের লোকসভায় একতৃতীয়াংশ সংরক্ষণ এবং শিশু ও নারীদের উপরে যৌন-হয়রানীর সুরাহা করা, ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ বিশয়ও এবারের ইশতেহারে যুক্ত করেছে এই মারক্সবাদী দলটি। মহাসচিব শ্রী সীতারাম ইয়েচুরি এই ইশতেহার প্রকাশের সময় জানান, এই নির্বাচন স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনগুলির মধ্যে অন্যতম। সংবিধানে সংজ্ঞায়িত ধর্মনিরপেক্ষ গনতান্ত্রিক ভারত প্রজাতন্ত্রের ভবিষ্যৎ রক্ষা করার সাথে সাথে দলের পুনঃজাগরণ এই দুই নিরিখেই এই নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

জানিনা এই নির্বাচনে কে জিতবে, কে হারবে। জানিনা যারা ক্ষমতায় আসবে তারা কতোটা নিজেদের প্রতিশ্রুতিগুলি রক্ষা করবে। জানিনা তারা কতোটা সুনিশ্চিত করবে লিঙ্গ-যৌন-প্রান্তিক মানুষদের অধিকার। অন্য দলের সমর্থন ছাড়া সিপিআইএমের পক্ষে একা হাতে বিল পাশ করাও সম্ভব নয়, যদি তারা জিতেও যায়। আমাদের অভিজ্ঞতা আমাদের শিখিয়েছে একটিই সারসত্য। “না আঁচালে বিস্বাস নেই।” তবুও ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্কসবাদ)-কে ধন্যবাদ আমাদের কথা নিজেদের নির্বাচনী ইশতেহারে যুক্ত করার জন্যে। টনক তাহলে দেরীতে হলেও নড়লো?

** বিঃ দ্রঃ কাঁচালঙ্কা কোন রাজনৈতিক দলকে সরাসরি সমর্থন করেনা। কিন্তু এলজিবিটি সম্প্রদায়ের পক্ষে ও বিরুদ্ধে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল কি কি পদক্ষেপ নিচ্ছে তার সমালোচনা মুক্তকণ্ঠে করতে কোন সংকোচও বোধ করেনা।

তথ্যসূত্রঃ

১। সিপিআইএমের নির্বাচনী ইশতেহার 

২। ইশতেহার প্রকাশের সময় গণমাধ্যমের সামনে মহাসচিব শ্রী সীতারাম ইয়েচুরির বিবৃতি 

ছবিসূত্রঃ

উইকিপিডিয়া (পাবলিক ডোমেইন লাইসেন্স) 

Exit mobile version