যৌনতায় যখন পরিচয়/১৭
অবকাশে সঞ্জয়
– আচ্ছা জীবনের জয় পরাজয়ে পরিচয়ের গুরুত্ব কতখানি?
– বিশাল গুরুত্ব।
– তাই নাকি?
– হ্যাঁ। সেজন্যই তো কেউ পরিচয় গোপন করে। কেউ আবার গোপন পরিচয় ফাঁস করে দেয়।
– যেমন?
– যেমন কর্ণ অস্ত্রশিক্ষায় জয়লাভ করতে গুরুদেব পরশুরামের কাছে নিজ পরিচয় গোপন করেছিলেন। আবার কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে পান্ডবদের জয় নিশ্চিত করতে কুন্তি নিজে গিয়ে কর্ণের জন্মপরিচয়ের গোপনীয়তা ফাঁস করে দিয়েছিলেন।
– হুম বুঝলাম। তাহলে তোমার মত কি? নিজ পরিচয় গোপন করা ভালো, নাকি সঠিক পরিচয় দিয়ে দেওয়া উচিৎ?
– ভালো প্রশ্ন করেছো। কিন্তু গোপন করলেও বিপদ। আবার পরিচয় দিলেও সর্বনাশ।
– তাহলে তো মহাসমস্যা।
– সমস্যা বলে সমস্যা। তুমি নিশ্চয় জানো সম্প্রতি এক স্কুলশিক্ষক নিজ যৌন পরিচয় প্রকাশ করায় তার চাকরী গিয়েছে।
– হুম জানি। এবং তার বিরুদ্ধে এও অভিযোগ তিনি তার যৌন পরিচয় গোপন করে এই চাকরীতে ঢুকেছিলেন।
– ঠিক সেদিনের কর্ণের মতো তাই না?
– হ্যাঁ। তাহলে এখন উপায়। জীবনযুদ্ধে কর্ণের মতো ইনিও কি পরাজিত হবেন?
– কর্ণ কি শেষ পর্যন্ত পরাজিত নাকি বিজয়ীবীর হয়ে বেঁচে আছেন?
– বিজয়ী হয়ে।
– তবে?
– তাহলে তুমি বলতে চাইছো প্রয়োজনে নিজ পরিচয় গোপন করায় কোন দোষ নেই?
– একদম। তবে তা ঠিক সময়ে প্রকাশও কোরো। তাহলেই বিজয় তিলক পরিয়ে দেবে তোমার ললাটে মহাকাল।
[ছবিঃ অরূপ দাস]
[সম্পাদকীয় পুনশ্চঃ সাম্প্রতিক বাস্তব ঘটনার উল্লেখ থাকলেও, এই লেখা ১০০% তথ্যগতভাবে সঠিক নাও হতে পারে। সাহিত্যের স্বার্থে কিছু কল্পনার মিশ্রণের সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দেওয়া যায়না। লেখক, সম্পাদক, এবং কাঁচালঙ্কার দল, বরাবরই লিঙ্গ-যৌন-প্রান্তিক মানুষদের উপরে হয়ে চলা অন্যায়ের তীব্র প্রতিবাদ করে চলেছে, এবং আমাদের তরফে এই লড়াই চলতেই থাকবে যতদিন না তাদের মানবাধিকার এবং সমানাধিকার সুপ্রতিষ্ঠা পাচ্ছে]