যৌনতায় যখন পরিচয়/১৯
অবকাশে সঞ্জয়
– আপনার নাম?
– অনিমেষ দত্ত।
– পিতার নাম?
– অরবিন্দ দত্ত।
– বয়স?
– বত্রিশ।
– লিঙ্গ?
– পুং
– লেখাপড়া?
– ইতিহাসে এম.এ.
– জীবিকা?
– প্রাইভেট টিউশন।
– অবসরে কি কি করেন?
– গান শুনি। একটু আধটু বই পড়ি।
– ওকে। থ্যাঙ্ক ইউ।
– ব্যাস? আর কোন জিজ্ঞাসা নেই?
– না! কোন মানুষের পরিচয় হিসাবে এটুকু তো যথেষ্ট।
– তাই?
– হুম।
– আমার মনে হয় এগুলো কোন মানুষের পরিচয়ই নয়।
– তাহলে আপনিই বলুন কোন মানুষের পরিচয় পেতে কি কি জানা উচিৎ?
– কেন বাসের গায়ে লেখা থাকে তো কি জানে উচিৎ?
– মানে!
– বা রে, বাসে উঠলে দেখেন তো বড়বড় করে লেখা থাকে আপনার ব্যবহার আপনার পরিচয়।
– বুঝলাম। তা আপনার ব্যবহার কেমন তা কিছু প্রশ্ন করে জানার উপায় আছে বলে তো কখনো শুনি নি। আপনিই বলুন কি প্রশ্ন করব।
– নাম ধাম জিজ্ঞেস করার পরেই আপনি জানতে চাইতে পারতেন যে রাস্তাঘাটে কাদের দেখতে ভালো লাগে?
– গুড কোশ্চেন। বেশ বলুন কাদের দেখেন?
– ছেলেদের।
– সে কি! আপনি ছেলে হয়ে মেয়েদের না দেখে ছেলেদের দেখেন কেন?
– ভালো লাগে তাই।
– হুম। কিন্তু…
– অনুচ্চারিত প্রশ্ন করবেন না। সরাসরি জিজ্ঞাসা করুন।
– ছেলেদের প্রতি আকৃষ্ট হন। তার মানে আপনি কি…
– আবার অসম্পূর্ন জিজ্ঞাসা। স্পষ্ট বলুন।
– আপনি কি সমকামী?
– হ্যাঁ। বিছানায় ভালোবাসার সময় পাশে কোন পুরুষই পছন্দ।
– আপনাকে দেখে তো…
– আবার কথার কথায় থেমে যাওয়া। যাইহোক আপনাকে তো বললাম, দেখে বা নাম ধাম জেনে কারও পরিচয় জানা যায় না। জানতে চেষ্টাও করবেন না। পরিচয় জানা যায় ব্যবহারে। আর ব্যবহার জানা যায়…
– কাছাকাছি হলে। তাই না।
– হুম। কিন্তু বেশিরভাগ যতটা কাছে আসা উচিৎ ততটা না এসেই মনগড়া কিছু বিশ্বাস থেকে সিদ্ধান্ত নেয়। সেটা আরও মুশকিল।
– আমি তেমন সিদ্ধান্ত নেব না। কাছে এসে জেনে বুঝে সিদ্ধান্ত নেব। আজ আসি। পরিচয়পর্বে এর বেশি কাছাকাছি হওয়াটা ভালো দেখায় না।
– আসুন।